হ্যালো ভিউয়ার্স আসসালামু আলাইকুম । আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন । আজকে আমি আমার পোষ্টের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ কবিতার প্রশ্ন উত্তর তুলে ধরব । মহান মুক্তিযুদ্ধ একদিনে শুরু হয়নি । ১৯৪৮ সালে ভারত বর্ষ ভাগাভাগি হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের তৈরি হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানীদের শোষণ করে সবকিছু প্রতি পাকিস্তানি নিয়ে যায় । তাতেও বাঙালিরা ক্ষেপে যায়নি সহ্য করেছে যখন ১৯৫২ সালে বাঙ্গালীদের মুখের ভাষা বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে চায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তখন তারা 1952 সালের ভাষা আন্দোলনে ডাক দেয় । ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের জন্য মিছিল শুরু করা হয় সেখানে, রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত শফিউসহ আরো অনেককে হত্যা করা হয় ।
তারপর থেকেই একের পর এক আন্দোলনের দাগ দেওয়া হয় ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এগুলো থেকেই আস্তে আস্তে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ । আর যেকোনো দেশের মুক্তিযুদ্ধ একদিনে শুরু হয় না । তাই আজকে আমি আমার উত্তরের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি 1969 কবিতার এমসিকিউ এবং প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরবো ।আশা করছি আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবেন।
Table of Contents
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
ক. কৃষ্ণচূড়া কিসের প্রতীক?
খ. বিপরীত চেতনা বলতে কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আলোকে সংশ্লিষ্ট কবিতার নামকরণের যথার্থতা আলোচনা করো।
ঘ. বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেরণা ছিল বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন – যুক্তিটির বার্থতা নিরূপণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন :
তিনজন আমরা পাশাপাশি হাটছেন। রাহাত দোকান দিচ্ছে। আর অপুর হাতে ছিল একটি মস্ত প্লাকার্ড। তার ওপর লাল কালিতে লেখা ছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। মিছিল হাইকোর্টের মোড়ে পৌঁছাতে অকস্মাৎ আমাদের সামনের লোক গুলো চিৎকার করে পালাতে লাগল চারপাশে । ব্যাপার কী বোঝার আগেই চেয়ে দেখি, প্লে কর্ডসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তপু। কপালের ঠিক মাঝখানটায় গোল একটা গর্ত। আর সে গর্ত দিয়ে নির্ঝরের মতো রক্ত ঝরছে তার।
ক. কবি কার মুখকে তরুণ-শ্যামল পূর্ব-বাংলার সঙ্গে তুলনা করেছেন?
খ. ফুল নয়, ওরা শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ – ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? বর্ণনা করো।
ঘ. “উদ্দীপক ও ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত
সংগ্রামী চেতনার এক অসাধারণ শিল্পভাষ্য। – মন্তব্যটি তুমি স্বীকার করো কি? তোমার মতামত সহ বিশ্লেষণ করো।
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার পটভূমি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ১৯৬৯ এ সূচিত পূর্ববঙ্গের মানুষের গণ আন্দোলন।
কবি এ কবিতায় রচনা করেছেন → বিচিত্র শ্রেণি পেশার মানুষের স্বত:স্ফূর্ত সংগ্রামী চেতনার অসাধারণ এক শিল্পভাষ্য।
সকাল সন্ধ্যায় এখন সে রঙে ছেয়ে গেছে পথ ঘাট’ → এখানে ‘ সে রঙে’ বলতে বোঝানো হয়েছে- আমাদের চেতনার রঙ এর বিপরীত রঙ এর কথা।
সারা দেশে অশুভ আস্তানা → ঘাতকের।
১৯৬৯ এ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করে → শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৬৯ এ ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে → ছাত্ররা।
১৯৬৯ এর অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন → আসাদুজ্জামান, মতিউর, ড. শামসুজ্জোহা প্রমুখ।
চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ’ এখানে ‘কমলবন’ বলতে বোঝানো হয়েছে → মানবিকতা, সুন্দর ও কল্যাণের জগত।
রাজপথে নামে —- সালাম।
শূন্যে ফ্ল্যাগ তোলে → সালাম।
ঘাতকের থাবার সম্মুখে বুক পাতে → বরকত।
সালামের চোখ আজ → আলোচিত ঢাকা।
সালামের মুখ আজ → তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা।
অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে → সালামের হাত থেকে।
অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে → নক্ষত্রের মতো।
প্রশ্ন-১. শামসুর রহমান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : শামসুর রাহমান ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন-২. শামসুর রাহমান সারা জীবন কিসের পক্ষে ছিলেন?
উত্তর : শামসুর রহমান সারাজীবন গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন।
প্রশ্ন-৩. ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটির রচয়িতা কে?
উত্তর : ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটির রচয়িতা শামসুর রাহমান।
প্রশ্ন-৪. ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন-৫. ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?
উত্তর : ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি গদ্য ছন্দে রচিত।
প্রশ্ন-৬. ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি কোন পটভূমিতে রচিত?
উত্তর : ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতাটি উনিশশো ঊনসত্তর সালের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে রচিত।
প্রশ্ন-৭. রাজপথে শূন্য ফ্লাগ তোলে কে?
উত্তর : রাজপথে শূন্য ফ্লাগ তোলে সালাম।
প্রশ্ন-৮. ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় আমাদের চেতনার রং কী?
উত্তর : ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় আমাদের চেতনার রং একুশের কৃষ্ণচূড়ার মতো লাল।
প্রশ্ন-৯. কোন ফুল শহরে নিবিড় হয়ে ফুটেছে?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়া ফুল শহরে নিবিড় হয়ে ফুটেছে।
প্রশ্ন-১০. ‘হরিৎ উপত্যকা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ‘হরিৎ উপত্যকা’ শব্দের অর্থ সবুজ উপত্যকা।
প্রশ্ন-১১. কার অশ্রুজলে বাস্তবে বিশাল চত্বরে ফুল ফোটে?
উত্তর : দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলে বাস্তবে বিশাল চত্বরে ফুল ফোটে।
প্রশ্ন-১২. ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি কীসের বিকাশে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম হয়ে উঠেছে?
উত্তর : ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি গদ্যছন্দ ও প্রবহমান ভাষার সুষ্ঠু বিকাশে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম হয়ে উঠেছে।
প্রশ্ন-১৩. কৃষ্ণচূড়া কীসের প্রতীক হয়ে উঠেছে?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়া শহীদের, বিপ্লবী-বিদ্রোহীদের প্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
প্রশ্ন-১৪. আসাদুজ্জামান কোন আন্দোলনে শহীদ হন?
উত্তর : আসাদুজ্জামান ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন।
প্রশ্ন-১৫. ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতায় কার অশ্রুজলের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতায় দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলের কথা বলা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতা
—————-লেখকঃ শামসুর রাহমান
আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে
কেমন নিবিড় হয়ে। কখনো মিছিলে কখনো-বা
একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়-ফুল নয়, ওরা
শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।
একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রং।
এ-রঙের বিপরীত আছে অন্য রং,
যে-রং লাগে না ভালো চোখে, যে-রং সন্ত্রাস আনে
প্রাত্যহিকতায় আমাদের মনে সকাল-সন্ধ্যায়-
এখন সে রঙে ছেয়ে গেছে পথ-ঘাট, সারা দেশ
ঘাতকের অশুভ আস্তানা।
আমি আর আমার মতোই বহু লোক
রাত্রি- দিন ভূলুণ্ঠিত ঘাতকের আস্তানায়, কেউ মরা, আধমরা কেউ,
কেউ বা ভীষণ জেদি, দারুণ বিপ্লবে ফেটে পড়া।
চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ।
বুঝি তাই উনিশশো উনসত্তরেও
আবার সালাম নামে রাজপথে, শূন্যে তোলে ফ্ল্যাগ,
বরকত বুক পাতে ঘাতকের থাবার সম্মুখে।
সালামের চোখে আজ আলোচিত ঢাকা,
সালামের মুখে আজ তরুণ শ্যামল পূর্ববাংলা।
দেখলাম রাজপথে, দেখলাম আমরা সবাই জনসাধারণ
দেখলাম সালামের হাত থেকে নক্ষত্রের মতো
ঝরে অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা
আর বরকত বলে গাঢ় উচ্চারণে
এখনো বীরের রক্তে দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলে
ফোটে ফুল বাস্তবের বিশাল চত্বরে
হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায়। সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ,
শিহরিত ক্ষণে ক্ষণে আনন্দের রৌদ্রে আর দুঃখের ছায়ায়।
সর্বশেষ কথা,
আমি আমার পোষ্টের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন এবং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরেছি । এই কবিতাটি হচ্ছে কবি শামসুর রহমানের একটি বিখ্যাত কবিতা । আপনারা যারা এই কবিতাটির প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন । আশা করছি আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হতে পারবেন । এ ধরনের আরও পোস্টটিতে আমাদের ওয়েব সাইটে সাথেই থাকুন ।