কুরআন শরীফ মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষের হেদায়েতের জন্য সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম এর কাছে পাঠিয়েছেন । এখানে আমরা কিভাবে জীবন যাপন করলে ভালো থাকবো এবং পরে জান্নাতবাসি হতে পারব সে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর হাদিস হচ্ছে যেগুলো নবী-রাসূলের মুখ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলোই । কারণ প্রত্যেকটি নবী রাসুলের কথা ছিল অধিক মূল্যবান । আর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ সাঃ । মহান আল্লাহতালা সমস্ত ব্রহ্মান্ডের মালিক তাই তার এবাদত দের জন্য আমাদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন । কিন্তু আমরা তাঁর ইবাদত না করে ভুল পথে হাটতেছি ।
তাই অনেকেই আছেন যারা কোরআন শরীফ ও হাদিসের সর্বশ্রেষ্ঠ বাণী গুলো শুনতে চাই । তাই আমরা তাদের তো চিন্তা করি আজকের এই পোস্টটি করেছি । আপনার জন্য আমাদের পোস্টের মাধ্যমে খুব সহজেই কোরআন হাদিস থেকে বাণী এবং উক্তি গুলো পেয়ে যান । তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কোরআন হাদিসের আলোকে সর্বশ্রেষ্ঠ বাণী ও উক্তি গুলো ।
কুরআন-হাদীসের শ্রেষ্ঠ বাণী
আপনি কি কুরআন হাদিসের শ্রেষ্ঠ বাণী সম্পর্কে জানার জন্য এসেছেন তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি শুধু আপনার জন্যই । কারণ এখন আমি আমার পোস্টের মাধ্যমে কুরআন-হাদীসের শ্রেষ্ঠ বাণী গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরব । যা আপনাকে আরও ভালো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে । ভালো কাজ করলে মহান আল্লাহতালা খুশি হন আর তিনি খুশি হলেই আমরা মৃত্যুর পর ভালো জায়গায় থাকতে পারবো ।
তাই আমাদের প্রতিনিয়ত ভালো কাজগুলো করা উচিত । কারণ পৃথিবীর জীবন হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে সুখ মরীচিকা মাত্র । তাই মৃত্যুর পরের জীবন অনন্তকালের জীবন সে জীবনের কথা চিন্তা করে কিছু আমল করতে হবে যাতে পরকালে ভালো জায়গায় থাকতে পারি । তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কুরআন ও হাদিসের শ্রেষ্ঠ বাণী সম্পর্কে ।
- দুটি চোখকে দোজখের আগুন স্পর্শ করবে না; একটি হলো সেই চোখ, যা আল্লাহর ভয়ে রোদন করে, আর দ্বিতীয় হলো সেই চোখ যা রাতভর আল্লাহর রাস্তায় প্রহরা দিচ্ছিল।
—— তিরমিযী - যে ব্যক্তি সাচ্চাদিলে শাহাদাত কামনা করে, তাকে শাহাদাতের মর্যাদাই দান করা হয়; সে তার নিজের বিছানায় মৃত্যুবরণ করলেও।
—— মুসলিম - যে ব্যক্তি নিজের ধনমালের কারণে নিহত হয়েছে, সে শহীদ।
—— বুখারী ও মুসলিম - ফিতনার সময় বন্দেগী করার সওয়াব, আমার দিকে হিজরত করার সমতুল্য।
—— মুসলিম - আল্লাহর পথে সকাল ও সন্ধ্যায় অতিবাহিত করার দুনিয়া ও তার মধ্যকার সকল বস্তুর চেয়ে উত্তম।
—— বুখারী ও মুসলিম - রাতের (নফল) নামায হলো দুই দুই রাকায়াতের; তোমরা যখন সকাল হবার ভয় করবে, তখন এক রাকায়াত বিতর পড়বে।
—— বুখারী ও মুসলিম - আর নামায আদায় করো এবং যাকাত প্রদান করো।
—— বাকারা: ৪৩ - যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আকাঙ্খায় শবে কদরের রাতে ইবাদাত করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
—— বুখারী ও মুসলিম - তাদের পিঠ বিছানা থেকে আলাদা থাকে আর তারা শেষ পর্যন্ত আপন পরোয়ারদিগারকে ভীতি ও প্রত্যাশার সাথে ডাকে।
—— সাজদা: ১৬ - আর রাতের কোন কোন অংশে তোমরা জাগ্রত হও এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ো। এই রাত্রি জাগরণ তোমাদের জন্য কল্যাণের উৎস।
—— ইসরা: ৭৯ - যে ব্যক্তি জুমুআর দিন অযু করলো, সে ভালো এবং উত্তম কাজ করলো। আর যে ব্যক্তি গোসল করলো সে সর্বোত্তম কাজ করলো।
—— আবু দাউদ - যে ব্যক্তি ঈমানের তাগিদে এবং সওয়াব লাভের আশায় রমজান মাসে রোজা রাখে, তার পূর্বের গুণাহ মাফ হয়ে যায়।
—— বুখারী - অত:পুর যখন নামাজ শেষ হয়ে যায়, তখন তোমরা নিজ নিজ পথে ছড়িয়ে যাও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো।- জুমআ: ১০
- তোমাদের রাতের শেষ নামাযকে বিতরের নামাযে পরিণত করো।
—— বুখারী - হে লোকেরা! তোমরা আপন ঘর সমূহে নামায পড়ো। এ কারণে যে, ফরজ নামায ছাড়া লোকদের আপন ঘরে নামায পড়া উত্তম।
- সমস্ত নামায, বিশেষত; মধ্যবর্তী নামায, পূর্ণ হেফাজতের সাথে আদায় করো।
—— বাকারা: ২৩৮ - আর যদি তারা তওবা করে, নামায আদায় করে ও যাকাত আদায় করে, তাহলে তোমরা তাদের পথ ছেড়ে দাও।
—— তাওবা: ০৫ - জামায়াতের সাথে নামায পড়া, একাকী নামায পড়ার চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি ফযীলতময়।
—— বুখারী ও মুসলিম - আল্লাহর বান্দাহ হালো তারা, যারা জমিনের ওপর আস্তে পা ফেলে, আর যখন জাহিল লোকেরা তাদের সঙ্গে কথাবর্তা বলে, তখন তাদেরকে সালাম বলে বিদায় করে দেয়।
—— ফুরকান: ৬৩ - যে সব লোক অন্ধকার রাতে মসজিদের দিকে গম করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ আলোয় সমুজ্জল হওয়ার সুসংবাদ দান করো।
—— আবু দাউদ - যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, তা তার অন্তর্নিহিত তাকওয়ারই নিদর্শনের অন্তূর্ভক্ত।
—— সূরা হাজ্জ্ব: ৩২ - যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় মসজিদের দিকে গমন করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেন। যখনি সকাল-সন্ধা সে গমন করে, তখনই ঘটে।
—— বুখারী ও মুসলিম - যে ব্যক্তি আসর এর নামাজ ছেড়ে দিল, তার সমস্ত আমলই বাতিল হয়ে গেল।
—— বুখারী - অবশ্য নামায অশ্লীল ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে।
—— আনকাবুত: ৪৫ - যখন তোমরা আযান শোনো তখন সেই শব্দাবলীই উচ্চারণ করো, আযান প্রদানকারী যেগুলো উচ্চারণ করে থাকে।
—— বুখারী ও মুসলিম - যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করে তার দেহ থেকে তার গুণাহসমূহ ঝড়ে পরে যায়। এমনকি তার নখের নীচ থেকেও তা বের হয়ে যায়।
—— মুসলিম
কুরআন-হাদীসের শ্রেষ্ঠ উক্তি
আপনারা যারা কোরআন-হাদিসের অমূল্য উক্তি সম্পর্কে জানার জন্য এসেছেন তারা আমাদের পোস্টের সাথেই থাকুন আমরা এখন অবধি পোস্টের মাধ্যমে কুরআন-হাদীসের অমূল্য উক্তি গুলো তুলে ধরব । যা থেকে আপনারা উপকৃত হতে পারবেন । আর আশা করি সেই আলোকে জীবন যাপন করার চেষ্টা করবেন । কারণ জীবন একটাই মৃত্যুর পর আসে জীবন ফিরে পাবেন না । তাই বেঁচে থাকতে সকল আমল করে নিন দেখবেন ভবিষ্যতে ভালো কিছু পাবেন । তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কোরআন-হাদিসের অমূল্য উক্তি গুলো সম্পর্কে ।
- যে জানে, আর যে জানে না; তারা উভয়ে কি সমান সমান হতে পারে
—— সূরা জুমার: ০৯ - তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞানদান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।
—— সূরা মুজাদালাহ - আল্লাহকে তার বান্দাদের মধ্যেতো সেই ভয় করে, যে জ্ঞানের অধিকারী।
—— ফাতির: ২৮ - আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ সাধনের ইচ্ছে পোষণ করেন, তাকে দ্বীনি সংক্রান্ত ব্যাপারে বুঝ দান করেন।
—— বুখারী ও মুসলিম - হে জাতির লোকেরা! ওজন ও মাপে পূর্ণতা বিধান করো এবং লোকদের প্রাপ্য জিনিস কম দিওনা।
—— হুদ: ৮৫ - যে ব্যক্তি জ্ঞানের সন্ধানে বের হলো, সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায় থাকে।
—— তিরমিযী - কোন ব্যক্তিকে দ্বীনী ইলম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, সে যদি তা গোপন করে, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে আগুনের লাগাম পরানো হবে।
—— আবু দাউদ - তোমরা যদি শোকর আদায় করো, তাহলে আমি তোমাদের অনেক বেশি দান করবো।
—— ইবরাহীম: ০৭ - আর তাদের সর্বশেষ কথা এই হবে যে, সব প্রশংসাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনে জন্য।
—— সূরা ইউনুস: ১০ - যে ব্যক্তি সঠিক পথের দিকে আহ্বান জানায়, সে এ পথের অনুসারীদের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। তাতে ঐ লোকদের সওয়াবের বিন্দুমাত্র ঘাটতি হবে না।
—— মুসলিম - আর তোমাদের প্রভূ বলেছেন, তোমরা আমার কাছে দুআ করো, আমি তোমাদের দুআ কবুল করবো।
—— ফাতির: ৬০ - মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে আমার কাছে প্রিয় সেই বান্দাহ, যে শীঘ্র ইফতার করে।
—— তিরমিযী - যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা এবং সেই মোতাবেক কাজ করা থেকে বিরত থাকে না; সে তার খানাপিনা ছেড়ে দিক, এতে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।
—— বুখারী - যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল এবং তারপরও শাওয়ালের ছয় রোজা রাখলো, সে যেন সারাবাছর রোজা রাখলো।
—— মুসলিম - তুমি যখন রোজা রাখতে চাইবে, তখন তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে রোযা রাখবে।
—— তিরমিযী - যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সেও তার সমান সওয়াবের অধিকারী হবে। কিন্তু তাতে রোযাদারের সওয়াব কিছুমাত্র হ্রাস পাবে না। -তিরমিযী
- তোমরা সবাই মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করো, যেরূপ ওরা সবাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করছে। আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।- তাওবা: ৩৬
- তোমরা অবশ্যই সেহরী খাও; কারণ সেহরীতে বরকত আছে।
—— বুখারী - লোকেরা যতদিন শীঘ্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের মধ্য থাকবে।
—— বুখারী